পাহাড়ে পুরভোট সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণ। কোথাও কোনও অশান্তির খবর নেই। মানুষ নিশ্চিন্তে ভোট দিচ্ছেন। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের দিনটা কাটল নেহাতই আম ডিউটি করে। যখন পাহাড়ে ভোটের ডিউটি করতে আসা পুলিশ নিশ্চিন্তে বসে দিন কাটাচ্ছেন, তখন ভোটেরই ডিউটি করতে এসে রায়গঞ্জ, ডোমকল ও পূজালিতে কার্যত নাভিশ্বাস উঠল পুলিশের। দিনভর প্রাণ হাতে করে দায়িত্ব সামলালেন তাঁরা। কোথাও দুষ্কৃতীদের দাপটে পালিয়েও বাঁচলেন। আবার কোথাও আমজনতার হাতে আক্রান্ত হতে হল তাঁদের। দুষ্কৃতীদের হাতে চরম হেনস্থা ও মারধর খেতে হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও। এদিন সকালে ভোট শুরুর পর থেকেই রায়গঞ্জ, পূজালি বা ডোমকলে দেখা গেছে বাইক বাহিনীর তাণ্ডব। দিন যত গড়িয়েছে দুষ্কৃতী তাণ্ডব ততই মাত্রা ছাড়িয়েছে। বন্দুক উঁচিয়ে দুষ্কৃতীদের ছুটে যেতে দেখা গেছে ডোমকলে। আবার রায়গঞ্জে প্রকাশ্য রাস্তায় বন্দুক কোমরে গুঁজে ঘুরতে দেখা গেছে বেশ কয়েকজন যুবককে। পূজালিতে বেলার দিকে আচমকাই একটি বুথের সামনে দুষ্কৃতীরা গুলি, বোমা বর্ষণ শুরু করলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশই পালিয়ে যান। ভোটকর্মীরা ভোট নেওয়া ছেড়ে বাঁচার আশায় আশ্রয় নেন বাথরুমে। এখানে একটি বুথের সেকেন্ড পোলিং অফিসারই বেশ কিছুক্ষণের জন্য নিখোঁজ হয়ে যান। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ইভিএম ভাঙচুরের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। এছাড়া পূজালি জুড়েই এদিন বাইক বাহিনী দাপিয়ে বেড়িয়েছে। অনেকেই ভয়ে ভোট দিতে যাননি। ডোমকলেও অশান্তির একই ছবি ধরা পড়েছে। দক্ষিণনগর এলাকায় এদিন সকাল থেকেই বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। হাতে বন্দুক উঁচিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায় মুখে গামছা বাঁধা দুষ্কৃতীদের। বেশ কয়েকটি কেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টদের বার করে দেওয়া হয়েছে এই অভিযোগে জাতীয় সড়ক অবরোধও করে সিপিএম-কংগ্রেস। একই অবস্থা রায়গঞ্জেও। এখানেও প্রকাশ্য রাস্তায় বন্দুক নিয়ে ঘুরতে দেখা যাওয়া এক যুবককে বেশ কয়েকজন যুবক ধরে ফেলেন। মারধরের পর তাকে বন্দুক সমেত পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রায়গঞ্জের একাধিক বুথের সামনে বোমাবাজি ও গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ এসেছে ইভিএম ভাঙচুরেরও। সবমিলিয়ে এদিন দিনভর অশান্ত রইল সমতলের পুরভোট। অনেকের মতে, ৩টে পুরভোটেই যদি এই অবস্থা হয় তবে সামনের বছর পঞ্চায়েত আর তার পরের বছর লোকসভা ভোট। তখন তাহলে কী হবে!