State

সমতলে একাই একশো, পাহাড়েও ফুটল ঘাসফুল

ফের সবুজ আবীরে রঙিন বাংলার আকাশ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে তুলতে পরীক্ষা ছিল পাহাড়, সমতল মিলিয়ে ৭ পুরসভার নির্বাচন। সেই ভোটের ফলাফলে ফের গত বছরের ১৯ মে-র প্রতিফলন। বিরোধীদের ধূলিসাৎ করে বিপুল ভোটে জয়জয়কার তৃণমূলের। কংগ্রেসের খাসতালুক হিসাবে পরিচিত রায়গঞ্জ পুরসভায় এদিন ভোটের ফল চমকে দিয়েছে। ২৭টি আসনের মধ্যে ২৪টিই গেছে তৃণমূলের দখলে। বিজেপির দখলে গিয়েছে ২টি আসন। মাত্র ১টি আসন পেয়েছেন বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী। কার্যত এখানে কংগ্রেস দুর্গ গুঁড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল ঝড়। পূজালি পুরসভা তৃণমূলের দখলে ছিল। এবার তা ঘাসফুলের দখলেই রইল। পূজালির ১৬টি আসনের মধ্যে ১২টিই গেছে তৃণমূলের দখলে। বাকি ৪টির মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ২টি আসন, কং-বাম জোট পেয়েছে ১টি আসন এবং নির্দল পেয়েছে ১টি আসন। ডোমকল পুরসভায় এটাই প্রথম ভোট। এখানে ২১টি ওয়ার্ডের ২০টিই গেছে তৃণমূলের খাতায়। মাত্র ১টি জিতেছেন কংগ্রেস প্রার্থী। তবে এখানে ফলাফলটা ১৮টি তৃণমূল, ২টি নির্দল ও ১টি কংগ্রেস হতেই পারত। কিন্তু এদিন গণনাকক্ষের মধ্যেই বাম-কংগ্রেস সমর্থিত ২ জয়ী নির্দল প্রার্থী আশাজুল ইসলাম ও রফিক ইসলাম ঘোষণা করেন তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই ফল নিমেষে বদলে তৃণমূলের দখলে চলে যায় ২০টি আসন। বাকি ১টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থী জিতলেও সূত্রের খবর এই প্রার্থীও আগামী দিনে যাতে তৃণমূলে যোগ দেন তারজন্য তাঁর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সমতলে ৩ পুরভোটে এমন দুরন্ত জয় আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাদের বাড়তি উৎসাহ দিল বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন সমতলে একছত্র আধিপত্যের পাশাপাশি পাহাড়েও ইতিহাস গড়ল তৃণমূল। ১৯৮৬ সালের পর সমতলের কোনও মূলধারার রাজনৈতিক দল পাহাড়ের পুরভোটে দাঁত ফোটাতে পারেনি। এদিন সেই কাজটাও করে দেখাল তৃণমূল। জিতে নিল মিরিক পুরসভা। ৯ ওয়ার্ডের মিরিক পুরসভায় ৬টি জিতেছে তৃণমূল। বিজেপি-মোর্চা জোটের দখলে গেছে ৩টি আসন। ফলে মিরিকে বোর্ড গড়বে তৃণমূল। এর বাইরে বাকি ৩ পুরসভায় যদিও নিজেদের দাপট অক্ষুণ্ণ রেখেছে মোর্চা। দার্জিলিং পুরসভার ৩১টি আসনের মধ্যে মোর্চা জিতেছে ৩০টি আসন। মাত্র ১টি গেছে তৃণমূলের দখলে। কার্শিয়ঙয়েও মোর্চা-বিজেপি জোটের জয়জয়কার। কার্শিয়ঙয়ের ২০টি আসনের মধ্যে ১৭টি দখল করেছে মোর্চা। বাকি ৩টি গেছে ঘাসফুলের ঝুলিতে। ২৩ আসন বিশিষ্ট কালিম্পং পুরসভাতে ১৮টিই জিতে নিয়েছে মোর্চা জোট। তৃণমূল পেয়েছে ২টি আসন। মোর্চা ছেড়ে বেরিয়ে নতুন দল গড়া হরকা বাহাদুর ছেত্রীর দল জন আন্দোলন পার্টি বা জ্যাপ-এর দখলে গেছে ২টি আসন। বাকি ১টি পেয়েছে নির্দল। পাহাড়ে এবার তৃণমূলের প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মিরিকে ঘাসফুলের দুরন্ত ফল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরন্তর পাহাড়ে আসা এবং এখানকার সমস্যা জেনে তা সমাধানের আপ্রাণ চেষ্টার ফসল বলেই মনে করছেন তিনি। এদিকে এই ফল গণতান্ত্রিক নয় বলেই দাবি করেছে বিরোধী দলগুলি। তাঁদের দাবি যেভাবে ভোটের দিন সমতলে সন্ত্রাস চলেছে তাতে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। যদিও তৃণমূল সেকথা মানতে নারাজ। এত বিপুল ভোটে জয় মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন বলেই মনে করছেন তাঁরা। এবার দেখে নেওয়া যাক সমতল ও পাহাড়ে ফলাফলটা শেষমেশ কি দাঁড়াল –

সমতল


আসন তৃণমূল কং+বাম বিজেপি অন্যান্য
পূজালি ১৬ ১২
রায়গঞ্জ ২৭ ২৪
ডোমকল ২১ ২০

 

পাহাড়


আসন মোর্চা+বিজেপি তৃণমূল জেএপি অন্যান্য
দার্জিলিং ৩১ ৩০
কালিম্পং ২৩ ১৮
কার্শিয়ং ২০ ১৭
মিরিক

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button