বৃষ্টির জেরে গত রবিবারই বানভাসি চেহারা নিয়েছিল বীরভূমের লাভপুর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা, কেশপুর। এদিন আরও খারাপ চেহারা নিল দক্ষিণবঙ্গের ৯টি জেলা। জলের তলায় চলে গেছে অনেক এলাকা। বহু গ্রাম দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু জল আর জল। জলের তোড়ে অনেক সড়ক ভেঙে গিয়েছে। বেশকিছু সেতু জলের তলায় চলে গেছে। আতান্তরে পড়েছেন মানুষজন। ইতিমধ্যেই বাঁকুড়ার সোনামুখী, পাত্রসায়র, ইন্দাস জলের তলায় চলে গেছে। কংসাবতী, গন্ধেশ্বরী, শালি, বিলাই, দ্বারকেশর নদী কুল ছাপিয়ে বইছে।
বীরভূমের লাভপুর থেকে শুরু করে আশপাশের অনেক এলাকা বানভাসি। ময়ূরাক্ষী, কোপাই, বক্রেশ্বর নদী ফুঁসছে। কুয়ে নদীর জল ভয়ংকর চেহারা নেওয়ায় লাভপুর-লাঘাটা ব্রিজ ডুবে গেছে। এই কুয়ে নদীর জলই ভাসিয়েছে মুর্শিদাবাদের বড়োঞাঁ এলাকাও। পূর্ব বর্ধমানের খড়ি নদীর জল বেড়ে অনেক জায়গা প্লাবিত। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, জামুরিয়া, কুলটির অনেক জায়গা জলের তলায়। বর্ষায় মাটি নরম হয়ে গিয়ে জামুরিয়ার কেন্দায় এদিন ধস নামে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা, ঘাটাল, পিংলা, ক্ষীরপাই, কেশপুরে সড়ক উধাও হয়ে গেছে। যে কোনও জায়গায় যেতে নৌকাই ভরসা। বানভাসি গ্রামগঞ্জ ধরে সাধারণ মানুষের পরিবহণ এখন একমাত্র নৌকা। মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়ায় কাঁসাই ও শিলাবতী নদীর জল বেড়েছে। বাড়ছে কেলেঘাই নদীর জলও। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, কাঁথি, এগরার মত বেশ কিছু জায়গায় মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। দিঘায় সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস বিপদ বাড়িয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে প্রশাসনের তরফে নিষেধ করা হয়েছে।
জলে ভাসছে পুরুলিয়ার একাধিক এলাকা। হুগলির আরামবাগের অনেক এলাকা জলের চলায়। বানভাসি পাণ্ডুয়াও। এছাড়া ভদ্রেশ্বর, বৈদ্যবাটি, চুঁচুড়া, সিঙ্গুর জলমগ্ন। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের অনেক জায়গা জলমগ্ন। বেজায় সমস্যা পড়েছেন স্থানীয় মানুষ। হাওড়ার ৩০টি ওয়ার্ড জলমগ্ন। পঞ্চাননতলা, টিকিয়াপাড়ায়, সালকিয়া, ঘুসুড়ি সহ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা বানভাসি। গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে নবান্নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেচ দফতরের কর্মীদের সব ছুটি বাতিল হয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।