বৃষ্টি কমেছে। নিম্নচাপ সরেছে ঝাড়খণ্ডের দিকে। তবু জলযন্ত্রণা থেকে রেহাই পেলনা রাজ্যের একটা বড় অংশ। উল্টে ঝাড়খণ্ডের প্রবল বৃষ্টির ফল ভুগতে হচ্ছে এ রাজ্যের মানুষকে। পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব নদনদীর জল বাড়ছে। বানভাসি বিভিন্ন এলাকা। একাধিক জলাধার থেকে জল ছাড়ায় ক্রমশ অবস্থা ভয়ংকর চেহারা নিচ্ছে।
বাঁকুড়ায় গত রাতে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। তারসঙ্গে বিভিন্ন জলাধারের জল। সব মিলিয়ে বাঁকুড়ার অনেক এলাকা জলের তলায়। অনেক গ্রাম জলে ভাসছে। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় অবস্থা ভাল হওয়া দূরে থাক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। অনেক এলাকায় নৌকাই ভরসা। আস্ত গ্রাম, সড়ক দেখে মনে হচ্ছে অতিকায় নদী।
জল জমেছে মুর্শিদাবাদের কান্দিতেও। কান্দির বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। কান্দির সুনাম হল এখানকার ফসল। কিছুদিন আগেই ধানবপন করা হয়েছে। সেসব এখন জলের তলায়। কোনটা নদী, কোনটা চাষজমি কিছু আলাদা করার উপায় নেই।
হুগলির জুবিলি পার্ক এলাকায় দ্বারকেশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। সকাল থেকেই জল ঢুকছে আরামবাগ, খানাকুলে। বালির বস্তা ফেলে জল রোখার চেষ্টা চালাচ্ছে পুরসভা। কিন্তু যদি সত্যিই এই জল রোখা না যায় তবে আরামবাগ, খানাকুল সহ বিশাল এলাকা জলের তলায় চলে যাবে। এদিকে উদয়নারায়ণপুর সহ আশপাশের এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে।
বীরভূমে গত মঙ্গলবার বৃষ্টি তেমন হয়নি। ফলে কুয়ে, ব্রাহ্মণী, ময়ূরাক্ষী সহ প্রায় সব নদীর জল নামতে শুরু করেছিল। কিন্তু ফের একদিনের ব্যবধানে ছবিটা গেল বদলে। বুধবার থেকে ঝাড়খণ্ডের জলাধারগুলি থেকে জল ঢোকায় সব নদী ফের ফুঁসছে। দুকুল ছাপিয়ে জল ঢুকছে শহরে-গ্রামে। ফের বানভাসি কঙ্কালীতলা মন্দির।
পশ্চিম মেদিনীপুরের নন্দনপুরের দাসপুরে খালের জল গ্রামে ঢুকে পড়ায় ১ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এখানকার নদীগুলিও ফুঁসছে। পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামেরও বিস্তীর্ণ এলাকা বানভাসি। তারমধ্যেই ডিভিসি জল ছাড়ায় অবস্থা আরও শোচনীয় চেহারা নিচ্ছে।
গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে প্রশাসন। অনেক এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার সব ব্যবস্থা প্রশাসনের তরফে করা হয়েছে। নামানো হয়েছে নৌকাও।