সরেছে নিম্নচাপ। শুধু রাজ্যই নয়, ঝাড়খণ্ডেও কমে গেছে বৃষ্টি। শুক্রবার সকাল থেকেই দক্ষিণবঙ্গে ভাল রোদ উঠেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি থেকে জল নামতে শুরু করেছে। ব্যতিক্রমও রয়েছে। রোদ ঝলমলে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের একটা বড় অংশে জল নামার বদলে এদিন আরও বেড়ে গেছে। প্লাবিত হয়েছে দেবীপুর, মানশ্রী, সোনাতলা, রঘুনাথপুর, সন্তোষপুর সহ বেশ কিছু এলাকা। দামোদরের ওপর বাঁধ ভেঙেই এই বিপত্তি। বাঁধ ভাঙা জল হুহু করে ঢুকতে শুরু করেছে। ফলে এখানে অবস্থার উন্নতির জায়গায় অবনতি হয়েছে। পরিস্থিতি খারাপ আমতারও। এখানকার শতাধিক গ্রাম জলের তলায়। অবস্থা সামলাতে প্রশাসনের তরফে ৯০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।
অবস্থা খারাপ ঘাটাল, দাসপুরেরও। ফুঁসতে থাকা শিলাবতী নদীর জলে ঘাটাল, দাসপুর কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। গ্রামের কাঁচা বাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বিঘের পর বিঘে চাষ জমি জুড়ে এখন কূলকিনারাহীন জল। পাকাবাড়িগুলোর একতলা জলের তলায় চলে গেছে। গোটা এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন নৌকা বা ভেলা। কোথাও এতটুকু জমি দেখতে পাওয়া যাচ্ছেনা। আশার কথা একটাই, বৃষ্টি কমায় শিলাবতী নদীর জল নামতে শুরু করেছে। তবে বহু মৌজা ভেসে যাওয়ায় ৪০টি ত্রাণ শিবির খুলে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রশাসন। যাঁরা ত্রাণ শিবিরে না এসে জলবন্দি অবস্থাতেই বাড়ির ছাদে বা দোতলায় কোনওরকমে রয়েছেন তাঁদের কাছে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এরমধ্যেই এদিন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দাসপুরে যান সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলেন দুর্গত মানুষের সঙ্গে। সেখানেই একটি প্রশাসনিক বৈঠকও করেন। দুর্গত মানুষের কাছে খাবার, পানীয়জল, ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। প্রশাসনিক কর্তাদের বলেন, জল নামলে যত দ্রুত সম্ভব মানুষজনকে তাঁদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে।
বানভাসি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরও। জামালপুরের ১০-১২টি গ্রাম জলের তলায় চলে গেছে। ভাসছে রায়না। ভাসছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, কুলটি। এখানে এখনও বানভাসি চেহারা। রোদ ঝলমল করলেও দামোদর এতটাই ভয়ংকর চেহারায় রয়েছে যে জল এখনই নামার সম্ভাবনা নেই। তবে আশার কথা একটাই পাঞ্চেত ও মাইথন থেকে এদিন কোনও জল ছাড়া হয়নি। দুর্গাপুর ব্যারেজও জল ছাড়া কমিয়েছে। ফলে জল নামার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বীরভূমের বিভিন্ন নদীতে জল নামতে শুরু করেছে। ফলে জলমগ্ন এলাকাগুলি থেকেও জল সরছে। তবে এখনও বহু এলাকা জলের তলায়। আর বৃষ্টি না হলে রবিবারের পর অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।