উত্তরবঙ্গের ওপর থেকে ঘূর্ণাবর্ত সরে গিয়েছে। রোদও উঠেছে। কিন্তু মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর ও উত্তর দিনাজপুর, এই ৩ জেলার বাসিন্দাদের কাছে সবই ধাঁধার মত ঠেকছে। বৃষ্টি নেই। আকাশ পরিস্কার। অথচ নতুন নতুন এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাচ্ছে কীভাবে? উত্তর একটাই নদীর হাত ধরে উঁচু এলাকার জল পৌঁছে যাচ্ছে নিচু এলাকায়। ডুবছে সেসব জায়গা। অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে হুহু করে।
মালদহের একটা বড় অংশের হাল বেহাল করে দিয়েছে মহানন্দার জল। মহানন্দা নদী এখানে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। যার জেরে গত বুধবার রাতে আচমকাই ইংরেজবাজারের অনেক এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করে। নিমেষে বানভাসি চেহারা নেয় এলাকাগুলো। রাতারাতি ঘর ছেড়ে উঁচু জায়গায় সরতে বাধ্য হন মানুষজন। ইংরেজবাজারে জল ঢুকলে তার কথা সকলে জানতে পারেন। কিন্তু এর চারপাশে বহু পঞ্চায়েত এলাকা জলের তলায় চলে গেছে। বহু পরিবার আতান্তরে পড়েছেন। ভেসে গেছে রাস্তা, চাষজমি। মালদহের তপনের বিস্তীর্ণ এলাকাও জলমগ্ন।
এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের সঙ্গে মালদহের সংযোগকারী রাস্তা এদিন পুনর্ভবার জলে ভেসে গেছে। ফলে বালুরঘাট বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে পরিণত হয়েছে। বালুরঘাট শহরটা জলের তলায় চলে গেছে। বহু মানুষ ঘর ছেড়ে আত্মীয় পরিজনের কাছে চলে গেছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের ট্যাঙন নদীর জলে বানভাসি বংশীহারি। ভয়ংকর চেহারা নিয়েছে আত্রেয়ী নদী। যার ফলে বহু এলাকা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের চেহারা নিয়েছে। অনেক জায়গায় ত্রাণ পৌঁছয়নি বলেও ক্ষোভ রয়েছে আর্ত মানুষজনের। পানীয় জলের সংকটও বাড়ছে।
দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুরের অনেক জায়গাও এখনও জলের তলায়। খোদ রায়গঞ্জ শহরটাই বানভাসি। এছাড়া কালিয়াগঞ্জ সহ অনেক জায়গায় এখনও জল তেমন নামেনি। বরং বেশ কিছু গ্রাম নতুন করে বানভাসি হয়েছে। যদিও বৃষ্টি নেই। তবু জলযন্ত্রণা থেকে রেহাই নেই এখানকার বহু মানুষের।