State

নৌকাডুবি ঘিরে রণক্ষেত্র কালনা, শান্তিপুর

West Bengal Newsগঙ্গার ধার ধরে বন্দুক উঁচিয়ে কখনও তেড়ে যাচ্ছে পুলিশ। তো কখনও বৃষ্টির মত ইটের ঘায়ে পিছতে হচ্ছে তাঁদের। জনতা পুলিশের এই সংঘর্ষে এদিন সকাল থেকেই উত্তপ্ত বর্ধমানের কালনা ও নদিয়ার শান্তিপুর। মারমুখী উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে রবার বুলেট ছুঁড়তে হয়েছে। ফাটাতে হয়েছে কাঁদানে গ্যাসের সেল। তাতে অবস্থা দুপুর পর্যন্ত আয়ত্তে আনতে পারেনি বিশাল পুলিশ বাহিনী। ছবিটা গঙ্গার এপার, ওপারে ছিল একই। কালনা হোক বা উল্টোপারের শান্তিপুর, জনতা পুলিশের লড়াই ক্রমশ জটিল আকার নিয়েছে। গঙ্গার ওপরে তখন দাউদাউ করে জ্বলছে ছ’টি নৌকা। গঙ্গার জলে ভাসতে থাকা ছ’টি নৌকার সিংহভাগই পুলিশের চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এদিন। ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর শান্তিপুর ফিরতে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ হৈহৈ করে কালনার ফেরিঘাট থেকে নৌকায় উঠে পড়েন মানুষজন। নৌকার যা বহন ক্ষমতা তার চেয়েও অনেক বেশি লোক তাতে চড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ফলে যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই নৌকাটি টাল সামলাতে না পেরে গঙ্গায় উল্টে যায়। স্রোতের টানে বহু যাত্রী ভেসে যান। কয়েকজনকে স্থানীয়রাই উদ্ধার করেন। এরপর রাতেই প্রশাসনের তরফে শুরু হয় তল্লাশি। কালনা ও শান্তিপুরের মানুষের অভিযোগ উদ্ধারকাজ যত দ্রুত হওয়া উচিত ছিল তা হচ্ছেনা। সকাল থেকেই উদ্ধারকাজ চলছে ঢিমেতালে। সেইসঙ্গে ক্ষুব্ধ জনতার আরও অভিযোগ ঘাটে পুলিশি প্রহরা থাকলেও তারা অতিরিক্ত মানুষকে নৌকায় উঠতে বাধা দেয়নি। ফলে অতিরিক্ত ভারে উল্টে যায় নৌকা। ঘটে দুর্ঘটনা। বহু মানুষ স্রোতের টানে কোথায় ভেসে গেছেন তার খোঁজ পর্যন্ত নেই। রবিবার দুপুরের দিকে নিখোঁজদের তল্লাশিতে এনডিআরএফের ডুবুরিদের নামানো হলেও স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ কমেনি। তাঁদের বক্তব্য ঘটনার ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় পর এনডিআরএফকে ডাকা হয়েছে। এরফলে ভেসে যাওয়া মানুষগুলোকে প্রাণে ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট কম। এদিকে এদিন পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে জনতার ছোঁড়া ইটের ঘায়ে গুরুতর জখন হন কালনা থানার এক সাবইন্সপেক্টর মহম্মদ ইলিয়াস। তাঁর মাথা ফেটে যায়। আহত হয়েছেন এক কনস্টেবলও। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে রবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হলেও তাতে বিশেষ ফল হয়নি। তখনকার মত পিছু হটলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ফের ক্ষুব্ধ জনতা ইট, পাথর ছুঁড়তে ছুঁড়তে পুলিশের দিকে ধেয়ে এসেছেন। এদিকে ডুবুরি নামিয়ে এদিন বেলার দিকে জলের তলায় নৌকাটির খোঁজ মিলেছে। সেটিকে ক্রেন দিয়ে জলের ওপরে তুলতে উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রশাসন। শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ফেরিঘাটে ছ’টি নৌকায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর সেখানে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।



Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button