গত শনিবার সকালে টিউশন থেকে ফিরছিল ঝাড়গ্রামের ৩ কিশোরী। ঝাড়গ্রাম বাইপাস ধরে বাড়ির দিকে গল্প করতে করতে ফিরছিল তারা। হঠাৎ তাদের সামনে পথ আটকে দাঁড়ায় ২ যুবক। তাদের ২ জনের মুখই কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল। আচমকাই ৩ কিশোরীর হাত ধরে টানাটানি শুরু করে দেয় তারা। চিৎকার করলেও সাতসকালে নির্জন রাস্তায় লোকজন না থাকায় সাহায্য মেলেনি। সেই সুযোগে ২ দুষ্কৃতি ৩ কিশোরীকে নিয়ে ঢুকে পড়ে রাস্তার পাশের ঘন জঙ্গলে। কোনওরকমে দুষ্কৃতিদের হাত থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয় এক কিশোরী।
এরপর ওই কিশোরী তার ২ বান্ধবীর অপহরণের ঘটনা জানায় ঝাড়গ্রাম পুলিশকে। তদন্তে নেমে ঝাড়গ্রাম বাইপাসের ধারের চূড়ারবন জঙ্গলে তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু জঙ্গলের কোথাও মেলেনি ২ ছাত্রী বা ২ অপহরণকারীদের সন্ধান। এরপরই ঘটনা নেয় আসল মোড়। কিশোরীর থেকে অপহৃত বন্ধুদের নাম জেনে স্কুলে ও যে গ্রামের বাসিন্দা তারা সেখানেও খোঁজ শুরু করে পুলিশ। সামনে আসে চমকিত করে দেওয়ার মত তথ্য। স্কুলে কিশোরীর বলা নামের কোনও ছাত্রীই নেই। যে গ্রামে তারা থাকে বলে কিশোরী তথ্য দিয়েছিল, সেখানেও ওই নামে কোনও মেয়ে নেই। এইসব জানার পর পুলিশ কিশোরীটিকে জেরা শুরু করে সঠিক ঘটনা জানার জন্য। জেরায় ভেঙে পড়ে কিশোরী জানায় পুরো ঘটনাটাই বানানো। কোনও অপহরণের ঘটনা ঘটেনি।
এরপর ওই কিশোরী দাবি করে যে তার প্রেমিক তাকে জঙ্গলে নিয়ে যায় ও সেখানে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। ভয়ে সেখান থেকে সে পালিয়ে আসে। কিন্তু এই দাবির পেছনেও রহস্য দেখতে পাচ্ছে পুলিশ। যদি কিশোরীকে তার প্রেমিক জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়েই থাকে তাহলে পুলিশকে সেই ঘটনার কথা না জানিয়ে কেন সে অপহরণের গল্প ফাঁদল ও ২টি কাল্পনিক চরিত্রের সৃষ্টি করল তারও উত্তর খুঁজছে পুলিশ।