সব কাজ ফেলে দুপুরেই ছুটে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে। কথা বলেছিলেন স্বজন হারানো ভেঙে পড়া মানুষজনের সঙ্গে। পরে সারা দিনই খোঁজ নিয়েছিলেন উদ্ধারকাজের। নজর রেখেছিলেন উদ্ধারের গতি প্রকৃতির দিকে। শেষ বিকেলে যখন বাস থেকে একের পর এক দেহ বার করে পৌঁছে দেওয়া হতে লাগল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে, তখন সেখানেও পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। চিকিৎসক, নার্স থেকে হাসপাতাল কর্মীদের নির্দেশ দেন যেন মৃতদের শোকবিহ্বল পরিবারের মানুষগুলোর ময়নাতদন্তের পর দেহ পেতে কোনও সমস্যা না হয়। নিজেই একসময়ে মাইক হাতে তুলে কিভাবে পুরো ব্যবস্থাপনা চলবে তা জানিয়ে দেন। নিজে সরে গিয়ে ভিড়ভাড়ও কিছুটা হাল্কা করে দেন।
ততক্ষণে হাসপাতাল চত্বরে শুধুই কান্নার রোল। কেউ হারিয়েছেন বোনকে, কেউ ভাইকে, কেউ সন্তানকে, কেউ পরিবার, কেউবা হারিয়েছেন মা বা বাবাকে। অনেকেই কাঁদতে কাঁদতে অচেতন হয়ে পড়েন। স্বজন হারানো মানুষগুলোকে ধরে রাখা যাচ্ছিল না। বুক ফাটা কান্না মিশে যাচ্ছিল আকাশে বাতাসে। গোটা পরিবেশটাকেই কেমন যেন ভারী করে তুলেছিল মানুষগুলোর হাহাকার। অনেকে স্বজন হারানোর কষ্টে প্রলাপ বকছিলেন। কাউকে দেহ শনাক্ত করতেই নিয়ে যাওয়া যাচ্ছিল না। তারপরও অনেকে শেষ পর্যন্ত নিজেদের মানুষের নিথর দেহটুকু হাতে পেলেন। আর কিছু মানুষ রাত পর্যন্ত তন্নতন্ন করে খুঁজে বেড়ালেন সকালেও জলজ্যান্ত দেখা মানুষটাকে। কিন্তু পেলেন কই? এখনও যে কয়েকজনের দেহ নিশ্চিন্তে শুয়ে আছে ভৈরবের অতল গহ্বরে।