কেউ বেরিয়ে ছিলেন চিকিৎসা করাতে। কেউ ওষুধ আনতে, কেউ পরিজনের অনুষ্ঠান সেরে বাড়ি ফিরছিলেন, কেউ যাচ্ছিলেন কাজের খোঁজে। এক এক জন যাত্রী, তাঁদের এক এক রকম প্রয়োজন। যান একটাই। সেই অভিশপ্ত বাস। প্রাথমিক তদন্তের পর যে বাসের ভৈরবের জলে সলিলসমাধির জন্য দায়ী করা হচ্ছে বাস চালকের গাফিলতিকেই। তাঁর কানে মোবাইল গুঁজে বেপরোয়া গতিতে বাস চালানোর মর্মান্তিক মাশুল গুনতে হয়েছে একের পর এক পরিবারকে। স্বজন হারানোর যন্ত্রণায় যাঁদের চোখের জল শুকনোর নাম নিচ্ছে না। একদিন পার করেও যে শোকাতুর মানুষগুলো এখনও দাঁতে একটা দানা কাটেননি। জলস্পর্শ করেননি। এখনও অনেকে বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁদের আপনজন আর নেই।
সোমবার রাতেই শনাক্ত হওয়া দেহগুলির ময়নাতদন্ত শেষ করে তাঁদের আত্মীয়দের হাতে তুলে দিয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখনও অনেকেই পরিজনের দেহের হদিশ পাননি। একদিন পার করেও দেহ না মেলায় দিশেহারা হয়ে তাঁরা কখনও ছুটে যাচ্ছেন ভৈরবের তীরে উদ্ধারকাজ দেখতে। আবার কখনও ছুটে যাচ্ছেন হাসপাতালে। এদিকে মঙ্গলবারও নদীর দুপার জুড়ে উদ্ধারকাজ দেখতে মানুষের ঢল নামে। চোখভরা জল নিয়ে অনেকে সকাল থেকেই অধীর অপেক্ষায়। যদি দেখা মেলে তাঁর প্রিয়জনের। জীবিত না হোক, অন্তত মৃত মানুষটাকেও শেষবারের জন্য চোখের দেখা দেখতে। তাঁর অন্ত্যেষ্টিটুকু করতে, তাঁদের অপেক্ষার প্রহর গোনা যেন শেষই হতে চাইছে না।