ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাড়ে ১০টা। উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বিজয়নগর এলাকায় ৩ নম্বর গেটের কাছে ভালোই লোকসমাগম ছিল। এলাকারই একটি সেলুনে চুল দাড়ি কাটতে এসেছিল জেলফেরত দুষ্কৃতি এবং প্রোমোটার ঢাকাই গৌতম। সেই সময় আচমকা দোকানের ভিতরে ঢুকে পড়ে ৮ দুষ্কৃতি। প্রত্যেকের মুখ হেলমেটে ঢাকা। দোকানে ঢুকেই ঢাকাই গৌতমকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে দুষ্কৃতিরা। একাধিক গুলি খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রক্তাক্ত গৌতম। কাজ হাসিল হয়ে যাওয়ার পর বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে বাইকে চড়ে আলাদা আলাদা দিকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতির দল। স্থানীয়রা রক্তাক্ত গৌতমকে নিয়ে যান নিকটবর্তী হাসপাতালে। সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
সাতসকালে ফিল্মি কায়দায় এই শ্যুটআউটের ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় মধ্যমগ্রামে। কিছুদিন আগে প্রেসিডেন্সি জেলে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় পদো নামে আরেক দুষ্কৃতির। এই পদোর সাথে জমি দখল নিয়ে ঝামেলা চলছিল ঢাকাই গৌতমের। পদোর মৃত্যুতে তার অনুগামীদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে ঢাকাই গৌতমের উপর। এর আগেও ঢাকাই গৌতমের অফিসে গিয়ে হামলা চালিয়েছিল একদল দুষ্কৃতি। সেবারে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায় সে। সম্প্রতি মাদক পাচার কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জেল থেকে ছাড়াও পেয়েছিল সে। আশঙ্কা ছিল, জেল থেকে বার হলেই তার উপর আক্রমণ চালাবে বিরোধী দুষ্কৃতি দল। সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়ে গেল শুক্রবার সকালে। কে বা কারা এই খুনের ঘটনায় জড়িত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
যদিও ঘটনার পর চুপ করে বসে থাকেনি মৃতের অনুরাগীরা। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে। এই দাবিতে সকালে বেশ কিছুক্ষণ মধ্যমগ্রামে রাস্তা অবরোধ করে তারা। যার জেরে ব্যস্ত সময়ে যানজটে পড়ে ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। পরে পুলিশ এসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে আনে। ভাঙচুর চালানো হয় মধ্যমগ্রাম থানাতেও। সকাল বেলায় হাতে পিস্তল আর বোমা নিয়ে প্রকাশ্যে শ্যুটআউট! আতঙ্ক যেন কিছুতেই কাটছে না মধ্যমগ্রামবাসীর মন থেকে।