পাড়ার সবাই ‘ভালো ছেলে’ হিসেবে একডাকে চিনত রফিক মিঞাকে। কারোর সাথেই পারতপক্ষে ঝগড়া বিবাদে জড়াতেননা বছর ২৮-এর রফিক। সেই নির্বিবাদী রফিকের বিকৃত রক্তাক্ত দেহ মিলল বাড়ির সামনে থেকে। সোমবার সকালে যুবকের নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। মুখের ভিতর থেকে ভাঙা দাঁতের কপাটি খুলে বেরিয়ে এসেছে বাইরে। মাথার ঘিলু লুটোচ্ছে রাস্তায়। ক্ষতবিক্ষত থ্যাঁতলানো মুখ দেখে চেনার উপায় নেই, এই যুবক আসলে তাঁদের পরিচিত রফিকই। পেশায় পানের ব্যবসায়ী রফিক ওরফে রাজার এমন শোচনীয় পরিণতি কে বা কারা করল? কেনই বা খুন হতে হল আপাত নিরীহ স্বভাবের রফিককে? এই প্রশ্নের উত্তরই এখন হাতড়ে বেড়াচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বৈদ্যপাড়া এলাকার লোকজন।
প্রতিদিন রাতে পানের দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরতেন ওই যুবক। কিন্তু রবিবার রাতে রোজকার মত বাড়ি ফেরেননি তিনি। তাই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন যুবকের পরিবার। সোমবার ভোরের আলো ফুটতেই এলাকায় ছেলের মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পান তাঁরা। যুবকের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েন তাঁর বাড়ির লোক। নির্বিবাদী ভাল ছেলের মৃত্যুতে থমথমে হয়ে যায় বৈদ্যপাড়াও। বাসিন্দাদের অনুমান, পাড়ায় সিন্ডিকেটের অবৈধ কাজের প্রতিবাদ করার মাশুল দিতে হয়েছে ভাল মানুষ রফিককে। তাঁদের দাবি, বিগত কয়েক মাস ধরে রাতের অন্ধকারে বা প্রকাশ্যে এলাকায় বসছে বহিরাগতদের জুয়া, মদের আসর। তার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন ওই যুবক। মৃতের প্রতিবেশিদের অনুমান ওই বহিরাগতদের কোনও অপরাধমূলক কীর্তির কথাও জেনে গিয়েছিলেন রফিক। তাই মাথার পিছনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। তাঁদের এও অভিযোগ, কিছুদিন আগে কয়েকজন মদ্যপ যুবকদের সাথে বাকিতে জিনিস না দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল রফিকের। তার প্রতিশোধ নিতেই কি গতকাল রাতে ওই যুবকের উপর চড়াও হয়েছিল দুষ্কৃতিরা? সমস্ত দিক এখন খতিয়ে দেখছে বারুইপুর থানার পুলিশ।