আমার শরীর ভাল আছে। তোমরা নিজেদের শরীরের যত্ন নিও। গত শনিবার ছেলের বলা শেষ কথাগুলো এখনো পুত্রশোকে বিহ্বল পিতার কানে বাজছে। ৪ বছর ধরে কর্মসূত্রে প্যারিসেই রয়েছেন বাঙালি বিজ্ঞানী স্নিগ্ধদীপ দে। শতক্রোশ দূরে থাকলেও রোজ পরিবারের সঙ্গে ফোনে, স্কাইপে কথা হত তাঁর। গত শনিবারের পরের দিন অর্থাৎ রবিবার সারা দিনটা কেটে গেল। অথচ ছেলের কাছ থেকে কোনও ফোন এল না। এমনটা তো ৪ বছরে একদিনের জন্যেও হয়নি। তবে কি ছেলের শরীর খারাপ হয়েছে? নানা কুচিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন মেধাবী স্নিগ্ধদীপের বাড়ির লোক।
রবিবার রাতটাও কেটে যায়। তবুও প্যারিস থেকে উত্তরপাড়ার ভদ্রকালীর বাড়িতে ফোন না আসায় নড়েচড়ে বসে পরিবার। স্নিগ্ধদীপের বিদেশে থাকা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। প্যারিসের যে বাড়িতে স্নিগ্ধদীপ থাকেন, সেই বাড়ির ল্যান্ডলেডির ফোন নম্বর জোগাড় করা হয়। গত মঙ্গলবার ফোন যায় প্যারিসে। ফোনের ওপার থেকে আধা ফ্রেঞ্চ আধা ইংরাজি ভাষায় মহিলা কণ্ঠ জানায় বাঙালি বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর। হার্ট আট্যাক থেকে নাকি তাঁদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে! ল্যান্ডলেডির দাবি এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না মৃতের বাবা। যে ছেলে তার শরীর নিয়ে এত সচেতন ছিল, তার হার্ট অ্যাটাক হল কি করে? এই প্রশ্নের এখন উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করছে মৃত বিজ্ঞানীর পরিবার। আপাতত তাদের একটাই লক্ষ্য। মৃত ছেলের দেহ দেশে এনে তার সৎকারের ব্যবস্থা করা। বিদেশ বিভূঁইয়ে পড়ে থাকা স্নিগ্ধদীপের দেহ ফিরিয়ে আনতে বিদেশমন্ত্রকের কাছে আবেদন জানিয়েছে মৃতের পরিবার। ছেলের রহস্যমৃত্যুর তদন্তে সাহায্য করুক ভারত ও ফ্রান্সের সরকার। এখন এটুকুই আশা বিজ্ঞানী স্নিগ্ধদীপের শোকার্ত পিতার।