সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। বাড়িতে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল নদিয়ার রাণাঘাটের নপাড়ার এক কিশোরী। কিন্তু পরীক্ষার মুখেই বড়সড় ধাক্কা। যে কারণে পড়াশোনা তো দূর, পরীক্ষা দিতে পারার মত মানসিক জোরটুকুও এখন খুঁজে পাচ্ছেনা সে। মাথার ওপর নেই ছাদ। রাস্তাই এখন বাবা কাকার হাতে নির্যাতিতা কিশোরী ও তার মায়ের একমাত্র আশ্রয়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে তাদের ২ জনকে। বাড়ি গিয়ে বই আনার মত অবস্থাও নেই। বাড়ি গেলেই জুটছে পরিবারের শাসানি। কাকার সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার হুমকি। বইতো কবেই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছিঁড়ে দিয়েছে বাড়ির লোক। তাই এবছর আর মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ত দেওয়া হবেনা। এই আশঙ্কায় এখন দিন কাটছে মনমরা দশম শ্রেণির ছাত্রীটির।
কিশোরীর দাবি, বাবার সাথে তার কাকিমার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আছে। পেশায় মোটর ভ্যান চালক বাবা সেই কারণে সংসারে টাকা দিত না বলে দাবি তার। কিশোরীর দাবি, সম্প্রতি বাবার সাথে আপত্তিকর অবস্থায় কাকিমাকে দেখে ফেলেছিল সে। বাবার এহেন অশালীন আচরণের প্রতিবাদও জানিয়েছিল ষোড়শী মেয়ে। সেই প্রতিবাদ যদিও আমল দেয়নি কিশোরীর বাবা। তাই বাধ্য হয়ে সে কাকিমার সাথে বাবার অবৈধ সম্পর্কের কথা মাকে খুলে বলে। সেই নিয়ে স্বামীর সাথে বচসা শুরু হয় কিশোরীর মায়ের। অভিযোগ, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ঝগড়া চলাকালীন মেয়ে ও মাকে মারধর করে ওই কিশোরীর বাবা। কাকা ও কাকিমা মিলে তাদের বাঁশ পেটা করে। সকলে মিলে তার শ্লীলতাহানি করে বলে দাবি ওই কিশোরীর। তার আরও অভিযোগ, কাকাদের দিয়ে তার বাবা তাদের খুন করার চেষ্টা করে। প্রাণভয়ে ঘটনার দিন মেয়েকে নিয়ে তার মা শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে যান। বাবা, কাকা, কাকিমা সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে কিশোরীর বাবাসহ ২ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাকি অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।