ভোর সাড়ে ৩টে। ফাঁকা রাস্তা। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ঝড়ের গতিতে ছুটছিল পাথরবোঝাই ১টি লরি। উল্টোদিক থেকে একইভাবে ছুটে আসছিল আরেকটি লরি। তাতে সিমেন্ট বোঝাই করা ছিল। একে মেঘলা আবহাওয়া। তার ওপর ঘন অন্ধকারে মঙ্গলবার মুড়ে ছিল বাঁকুড়ার হেভির মোড়। দৃশ্যমানতা তাই কমই ছিল। পুলিশের অনুমান, সম্ভবত সেই কারণেই ২ লরির চালক একে অপরকে ঠাহর করতে পারেননি। আর যখন পেরেছেন, তখন পরিস্থিতি তাঁদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। পুলিশের ধারণা, প্রবল বেগে ছুটে আসা লরির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি ২ চালক। যার পরিণতিতে হয় অবধারিত সংঘর্ষ। সংঘর্ষের তীব্রতায় ২টি লরি দুমড়ে মুচড়ে যায়। দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে লরি ২টির ইঞ্জিন। ঘটনার আকস্মিকতা কাটানোর আগেই জ্বলন্ত লরিতে আটকে পড়েন ২ চালক। গাড়ির ভিতরেই জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁদের। আগুনের আঁচে ঝলসে যান লরির ১ জন খালাসিও। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মাঝরাতে বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন তাঁরা। দেখেন, ২টি লরিতে আগুন লেগে গেছে। ভিতরে আটকে পড়ে ঝলসে যাচ্ছেন ২ চালক। তাঁদের আর্তনাদ শুনে জ্বলন্ত গাড়ির আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন এলাকাবাসী। খবর দেওয়া হয় দমকলকেও। ততক্ষণে অবশ্য আগুনে ঝলসে গেছে ২ চালকের শরীর। পরে পুলিশ ও দমকলবাহিনী এসে উদ্ধার করে ঝলসে যাওয়া ২টি দেহ। জাতীয় সড়কের ওপর থেকে সরানো হয় ঝলসে যাওয়া লরি ২টি। দৃশ্যমানতা আর দুরন্ত গতিই কি লরি দুর্ঘটনার জন্য দায়ী? নাকি মত্ত থাকার কারণে লরির চালকরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন? সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।