চারিদিকে সিংহ, শ্বাপদ জঙ্গলে ৫ দিন পর আশ্চর্য রক্ষা হারানো বালকের
গহন অরণ্য। চারিদিকে সিংহের আনাগোনা। রয়েছে আরও নানা হিংস্র জানোয়ার। তারমধ্যেই হারিয়ে গিয়েছিল এক বালক। ৫ দিন পর বেঁচে ফিরল সে।
কথায় বলে রাখে হরি মারে কে! ফের তেমন এক উদাহরণ সামনে এল। যা শুনে কার্যত হতবাক হয়ে যাচ্ছেন সকলেই। এক গহন অভয়ারণ্য। হিংস্র শ্বাপদে ভরা। ওই একটি জঙ্গলেই কমপক্ষে ৪০টি সিংহ রয়েছে। যাদের সামনে পড়লে এতটুকু ক্ষমার অবকাশ থাকবেনা।
এছাড়া সর্বত্র হাতির আনাগোনা। পদে পদে বিপদ ওত পেতে আছে। সেই জঙ্গলেই পথ ভুলে ঢুকে পড়ে এক ৮ বছরের বালক। তারপর বাড়ি ফেরার রাস্তা ভুলে সে আরও জঙ্গলের মধ্যেই হারিয়ে যেতে থাকে।
একসময় টিনোটেন্ডা পুন্ডু নামে ওই বালক বুঝতে পারে সে পথ হারিয়েছে। এদিকে খিদেয় তখন পেট জ্বলছে। তেষ্টায় বুক ফেটে যাচ্ছে। টিনোটেন্ডা ঘাবড়ে যায়নি। বরং সে বাঁচার পথ খুঁজতে থাকে। ভয়কে জয় করে সে একটি গাছের ডাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে ফেলে।
একটি নদীর ধারের মাটি খুঁড়ে মাটির তলা থেকে যে জল বেরিয়ে আসে তাই সে পান করে তেষ্টা নিবারণ করে। খিদে মেটাতে ওই জঙ্গলের বুনো ফল খেয়ে নেয়। ঘুম পেলে খোলা আকাশের নিচে পাথরের ওপর শুয়ে পড়ে বিশ্রামও নেয়।
আর বাকি সময়টা সে জঙ্গলের মধ্যেই হাঁটতে থাকে। চেষ্টা করতে থাকে বাড়ি ফেরার। এভাবেই ওই জঙ্গলে তার রাত থেকে দিন হয়। আবার দিন থেকে রাত।
টানা ৫ দিন এভাবে কাটে তার। জিম্বাবোয়ের মাতুসাদোনহা জাতীয় উদ্যানের এই জঙ্গলে একা ঢোকা মানে প্রায় বাঁচার আশা খুব কম। সিংহ সহ হিংস্র জানোয়ার কেউ ছেড়ে কথা বলে না।
সেখানে ৫ দিন একা সাহসে ভর করে টিনোটেন্ডার এই লড়াইয়ের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন জিম্বাবোয়ের সাংসদ মুতসা মুরোমবেদজি। অবশেষে যেখানে সে হারিয়েছিল তার থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ৫ দিন পর টিনোটেন্ডাকে খুঁজে পান এক বন আধিকারিক। যিনি তাকে খোঁজার চেষ্টাও চালাচ্ছিলেন।
টিনোটেন্ডার শরীর খাপার বটে। তবে তার কোনও ক্ষতি জঙ্গলে হয়নি। কোনও জন্তু থেকেও নয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে এই ৮ বছরের বালকের আশ্চর্য রক্ষা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।